September 8, 2024, 12:30 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
নির্বাচনী বরাদ্দের টাকা লোপাটের অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে

নির্বাচনী বরাদ্দের টাকা লোপাটের অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার ব্যয় হিসেবে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া বরাদ্দের অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীনের বিরুদ্ধে। গত ২১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে তিনি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতে বিপুল অর্থ বরাদ্দ দেয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনকালীন ব্যয়ের জন্য সেসময় বরাদ্দের সম্পূর্ণ অর্থই উত্তোলন করা হয়। তবে, কমিশন নির্ধারিত খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় না করলেও ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে কাগজে কলমে সম্পূর্ণ অর্থই ব্যয় দেখানো হয়েছে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন সময়ের ৪৫ দিনে সহকারী রির্টারিং কর্মকর্তার ব্যবহৃত গাড়ির জ্বালানি বাবদ প্রতিদিন ৬ হাজার টাকা হারে মোট বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। প্রতিদিনের বরাদ্দের টাকায় প্রায় ৪২ লিটার জ্বালানি তেল ক্রয় করা সম্ভব। আর প্রতি লিটার তেলে ৬ কিলোমিটার হিসাবে ৪২ লিটার তেল শেষ করতে হলে দৈনিক গাড়ি চালাতে হবে ২৫২ কিলোমিটার।

নির্বাচনকালীন সময়ে একদিনে এত পরিমাণ যাতায়াত না হলেও ভুয়া ভাউচার জমা দিয়ে বরাদ্দের সম্পূর্ণ অর্থই ব্যয় দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া ইউএনওর ব্যবহৃত গাড়ির জ্বালানি বাবদ নিয়মিত সরকারি মাসিক বরাদ্দের ১৬৮ লিটার তেলও ব্যবহার দেখিয়েছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও মোহাইমেনা শারমীন। নির্বাচনকালীন উপজেলার আইনশৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতিসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও তা দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানোর জন্য একাটি নির্বাচনী নিয়ন্ত্রণকক্ষ (কন্ট্রোলরুম) খোলা হয়। নির্বাচনের আগের দিন মালামাল বিতরণের সময় থেকে নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এর দায়িত্বে থাকেন। নির্বাচনী নিয়ন্ত্রণ কক্ষের (কন্ট্রোলরুম) দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আপ্যায়ন বাবদ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় নির্বাচন কমিশন। তবে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চা-নাশতাতেই সীমাবদ্ধ ছিল ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দের এ আপ্যায়ন। এ ছাড়া নির্বাচনী সরঞ্জাম নামানো ও তা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের জন্য বরাদ্দকৃত গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়ার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের মজুরি বাবাদ বরাদ্দ ছিল ৪৯ হাজার ২শ টাকা। অথচ, কোনো শ্রমিক না নিয়ে এসব কাজ করানো হয় ইউএনও কার্যালয়ের স্টাফদের দিয়েই। উপজেলার ৪১টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী মালামাল আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত পরিবহন খরচ বাবদ কেন্দ্র প্রতি ৫ হাজার টাকা হারে মোট ২ লাখ ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় কমিশন। যা প্রত্যেক কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসারের মাধ্যমে বিতরণ করার কথা। কিন্তু, ভোটকেন্দ্রে মালামাল পরিবহন খরচের বিষয়ে কিছুই জানেন না সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসাররা।
উপজেলার ১৯ নং বাঁশবাড়িয়া কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ও অগ্রণী ব্যাংক বাগাতিপাড়া শাখার সিনিয়র অফিসার দিলদার হোসেন বলেন, নির্বাচনের সময় আমরা শুধু সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের ভাতা, অফিসারদের যাতায়াত খরচ এবং কেন্দ্রের বুথ প্রস্তুত বাবাদ কিছু টাকা হাতে পাই। এ ছাড়া মালামাল আনা-নেওয়ার দায়িত্বে থাকা গাড়িচালকদের খরচ বা ভাড়া বাবদ আমাদের কোনো টাকা দেওয়া হয় না।

ভোটকেন্দ্রে মালামাল আনা-নেওয়ার কাজ করা একাধিক গাড়িচালক জানান, নির্বাচনে এসব পরিবহন সংশ্লিষ্ট সব বিষয় দেখভাল করে থানা পুলিশ। গাড়ি ভাড়ার টাকাও থানা থেকে দেওয়া হয়। গাড়ি প্রতি ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও থানা থেকে প্রত্যেক গাড়ির চালককে ১ হাজার ৭শ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তারা। বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি নান্নু খান জানান, নির্বাচনী মালামাল পরিবহনের খরচ বাবদ গাড়ি প্রতি ২ হাজার টাকা করে ৪১টি গাড়ির টাকা পান। তবে, ১০টি গাড়ি অতিরিক্তি নেওয়ায় প্রাপ্ত টাকা সমন্বয় করে ৫০টি গাড়ি চালককে দেওয়া হয়েছে বলেন জানান তিনি। এ বিষয়ে জানতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মোবাইলে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। এ ছাড়া এ বিষয়ে কথা বলতে ইউএনও কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শুকুর আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com